বগুড়া প্রতিনিধিঃ
বগুড়া শহরের উত্তর চেলোপাড়ায় দিনের আলোয় প্রকাশ্যে দা–চাকু ও সাবল হাতে একদল সন্ত্রাসীর বীভৎস হামলায় রক্তাক্ত হয়েছেন রবিন (২৫) নামের এক যুবক। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার মাথা ও শরীরের একাধিক স্থানে গভীর কাটা জখম রয়েছে, প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৩ অক্টোবর দুপুর আনুমানিক ২টা ৩০ মিনিটে। এ ঘটনায় রবিনের মা রোজিনা বেগম ২০ জনের নাম উল্লেখ করে ও ২০ থেকে ২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বগুড়া সদর থানায় একটি এজাহার দাখিল করেছেন।
এজাহারে রোজিনা বেগম উল্লেখ করেছেন, তার ছেলে রবিন ও বন্ধু শাকিব মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে উত্তর চেলোপাড়া গণকবর রোডে বাসন্তী প্যারেজের পাশে পৌঁছালে একদল সন্ত্রাসী ওত পেতে থেকে তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
প্রথমে আসামী হাসান ও রাহুল হাতে থাকা চাইনিজ দা দিয়ে রবিনের মাথায় কোপ মারে। এক পর্যায়ে রবিন মাটিতে লুটিয়ে পড়লে রাসেল, সাজাহান, সুমন, ভাবন, আপেল ও রায়হানসহ আরও অনেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে ফেলে।
চিৎকার শুনে রবিনের ছোট ভাই হৃদয় ছুটে এলে তাকেও রায়হান সাবল দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে।
এজাহারে বলা হয়েছে, হামলার পর রবিন ও হৃদয়ের দেহ থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। স্থানীয়রা ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। রবিনের মাথায় সিটি স্ক্যান করা হয়, শরীরের একাধিক স্থানে সেলাই দিতে হয় এবং তাকে তিন ব্যাগ রক্ত দিতে হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী টুটুল বেপারী, সুফিয়া বেওয়া, নজরুল ইসলাম তালুকদারসহ আরও কয়েকজন সাক্ষীর নাম উল্লেখ করেছেন বাদী রোজিনা বেগম।
বাদী রোজিনা বেগম বলেন, “আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলতে চেয়েছিল তারা। আমি সুবিচার চাই।”
এজাহারে অভিযুক্তদের মধ্যে ফেরদৌস ওয়াহেদ মন্টু ও তার ছেলে ওমর শাহরিয়া ছানিসহ মোট ২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, এবং আরও অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান বাশির বলেন, “ঘটনাটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।”
ঘটনাস্থল সংলগ্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে হামলার দৃশ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ব শত্রুতার জেরে এই নৃশংস হামলা সংঘটিত হয়েছে।
No comments