বগুড়ায় দুই গ্রুপের রণক্ষেত্র: অগ্নিসংযোগে পুড়ল ২০ ঘর–দোকান, মামলা ১৭৯ জনের বিরুদ্ধে!
ফয়সাল হোসাইন সনি, বগুড়া
বগুড়ায় দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও ভয়াবহ অগ্নিসংযোগে পুড়ে ছাই হয়েছে অন্তত ২০টি ঘরবাড়ি ও দোকান। শহরের উত্তর চেলোপাড়া এলাকায় শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাতে থমথমে পরিস্থিতির মধ্যে এ ঘটনায় রাসেল নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ২৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহারে জানা যায়, ২৩ অক্টোবর বিকেল ৩টার দিকে শহরের সান্ধার পট্টি ও নারুলী পশ্চিম পাড়ায় দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে রণক্ষেত্রের মতো সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। দেশীয় অস্ত্র, রামদা, রড, লাঠি, এমনকি আগ্নেয়াস্ত্র পর্যন্ত ব্যবহৃত হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
সংঘর্ষের একপর্যায়ে দুর্বৃত্তরা বাদীর বাড়ি ও দোকানে আগুন ধরিয়ে দিলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় দুই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় রাসেল, জগলুর করিম, মুক্তার হোসেন ও সাইফুল ইসলামের বাড়ি ও দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আগুনে এবং লুটপাটে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৭০ লাখ টাকারও বেশি বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্র ও দোকানের মালামাল লুট হয়ে গেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সংঘর্ষে আশরাফ আলী নামে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়ে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তার মাথা ও হাতে গভীর জখম রয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
বাদী রাসেল অভিযোগ করে বলেন, “অভিযুক্তরা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে। আমরা এর প্রতিবাদ করেছিলাম বলেই আজ আমাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। চোখের সামনে সব শেষ হয়ে গেছে।”
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পরপরই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। মামলা এজাহারনামীয় ২৯ জন ছাড়াও অজ্ঞাত প্রায় ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান বাশির বলেন, “আমরা সংঘর্ষের ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পেয়েছি। ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আসামিদের শনাক্ত করা হচ্ছে। দ্রুত গ্রেফতার অভিযান শুরু হবে।”
উল্লেখ্য, একই ঘটনায় উত্তর চেলোপাড়া এলাকার আরও তিনজন আহত হলেও সংবাদ প্রকাশের সময় পর্যন্ত তাদের পক্ষ থেকে থানায় কোনো মামলা হয়নি।

No comments