শিরোনাম

নারী মেম্বারের পতিতালয়ে আগুন, মামলার প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

আল-আমিন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে সাবেক ইউপি সদস্য জাহানারা বেগম ওরফে জাইন্না মেম্বারের বাড়িতে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে দেহব্যবসা চালানোর অভিযোগে এলাকাবাসীর ক্ষোভ দাউ দাউ করে জ্বলে উঠেছে।

শেষ পর্যন্ত তার বসতঘরেই আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা!

ঘটনাটি ঘটে গত ১৯ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের মৌলভীরটেক এলাকায়।

স্থানীয়দের দাবি, জাইন্না মেম্বারের বাড়িতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নারীদের এনে দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক ব্যবসা চালানো হচ্ছিল। একাধিকবার সতর্ক করা হলেও তিনি বন্ধ করেননি এ কর্মকাণ্ড।

সেদিন রাতে উত্তেজিত এলাকাবাসী ওই বাড়িতে ঢুকে দুই নারীকে অনৈতিক অবস্থায় হাতেনাতে ধরে ফেলে।

আটক দুই নারী ফেনী জেলার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বিক্ষুব্ধ জনতা তার বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

গণপিটুনি থেকে বাঁচতে জাইন্না মেম্বার পালিয়ে যান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ঘটনার চার দিন পর বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) জাইন্না বেগম বাদী হয়ে ২০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩৫ জনকে আসামি করে মোট ৫৫ জনের বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।

এই মামলার প্রতিবাদে শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) জুমার নামাজের পর মৌলভীরটেক এলাকায় মুসল্লী, সমাজসেবী ও সাধারণ মানুষ একত্র হয়ে মানববন্ধন করে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন “১৭ বছর ধরে জাইন্না মেম্বারের ঘরে দেহ ব্যবসা চলছে। পুলিশ সব জানে, তবুও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। যারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে, আজ তারাই মামলার আসামি!”

বক্তারা আরও বলেন,জাইন্না শুধু কমলনগর নয়, রামগতি পর্যন্ত নারী ব্যবসার বড় সর্দার। তার কারণেই এলাকার ছাত্র-যুব সমাজ নষ্ট হয়ে পড়ছে। তারা অবিলম্বে এই মামলা প্রত্যাহার ও জাইন্নার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে জাইন্না মেম্বারের বাড়িতে দেহ ব্যবসা চলছে—এমন অভিযোগ আমরা পেয়েছি।

উত্তেজিত জনতা তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। মামলার কপি এখনো পাইনি। তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

একদিকে সাবেক নারী মেম্বারের দীর্ঘদিনের পতিতালয়ের অভিযোগ, অন্যদিকে সেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেই স্থানীয়দের নামে মামলা—এতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পুরো কমলনগর।

মুসল্লী ও সমাজবাসীর কণ্ঠে এখন একটাই দাবি: “পাপের আশ্রয় নয়, জাইন্নার বিচার চাই!”

No comments