শিরোনাম

ছুটির নামে দায়িত্বে গাফিলতি, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কোমলমতি শিক্ষার্থীরা







সটাফ রিপোর্টারঃ

বিদ্যালয়ে বিভিন্ন ছুটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত রয়েছেন এক সহকারী শিক্ষিকা। প্রধান শিক্ষক জানান, চাপে পড়েই তার ছুটির দরখাস্তে স্বাক্ষর করতে হয়েছে। এদিকে, ওই শিক্ষিকার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। 

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার উত্তর সুন্দরখাতা খালপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আফরিন সুলতানা লিয়া দীর্ঘ দিন ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। বিভিন্ন ছুটির অজুহাতে তিনি বিদ্যালয়ে না আসায় পাঠদান কার্যক্রমে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটেছে। এতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যেও চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষিকা আফরিন সুলতানা লিয়া অনিয়মিতভাবে ছুটি নিয়ে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। তার ক্লাসগুলো সহকর্মীদের মাধ্যমে চালাতে গিয়ে শিক্ষার মানে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সহকর্মীরা বলছেন, “আমাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব নিতে হচ্ছে। কখনো নিজের ক্লাস বাদ দিয়ে উনার ক্লাস নিতে হচ্ছে। এতে আমরা নিজের কাজেও ঠিকভাবে মনোযোগ দিতে পারছি না।”

বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে।

উত্তর সুন্দরখাতা খালপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “আফরিন সুলতানা লিয়া একাধিকবার ছুটি নিয়েছেন। ব্যক্তিগতভাবে আমি এত দীর্ঘ ছুটির পক্ষে না হলেও, উপরমহলের চাপ ও আবেগঘন কারণ দেখিয়ে আবেদন করায় সাক্ষর করতে বাধ্য হয়েছি।”

আফরিন সুলতানা লিয়ার বসবাস করা বাড়ি, ডিমলা উপজেলার বাবুরহাট গিয়ে দেখা যায় তিনি বাড়িতে নেই। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষিকা আফরিন সুলতানা লিয়া বর্তমানে ঢাকার হাজারিবাগ থানার মনেশ্বর রোডের ৪২/৪-বি বাবুল চৌধুরীর বাড়ির ৮ম তলায় ভাড়া থাকেন। সেখানে উপস্থিত হলেও তিনি এই প্রতিবেদকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। তার মোবাইল ফোনেও একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

অভিভাবকদের অভিযোগ, “সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে নানা প্রকল্প গ্রহণ করছে। কিন্তু একজন শিক্ষক মাসের পর মাস ছুটিতে থাকলে এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের সন্তানেরা।”

বিষয়টি নিয়ে ডিমলা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, বীরেন্দ্র নাথ রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিয়ম বহির্ভূতভাবে কেউ দীর্ঘসময় অনুপস্থিত থাকলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আফরিন সুলতানা লিয়া যদি কোনো অনিয়ম করে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

No comments