শিরোনাম

বগুড়ায় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগে মামলা

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ৭ম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণ, ধর্ষণে সহযোগিতা এবং পরে জোরপূর্বক বিয়ে পড়ানোর অভিযোগে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি দুলাল খাঁ'র বিরুদ্ধে। এঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা শফিকুল ইসলাম ধর্ষক অপূর্ব এবং সহযোগী  বিএনপি নেতাসহ ১০জনের বিরুদ্ধে থানায়  মামলা দায়ের করেছেন।

বৃহস্পতিবার রাতে এজাহারটি গ্রহণ করেছেন বলে নিশ্চিত করেন বগুড়ার ধূনট থানার ওসি সাইদুল আলম।

এজাহারে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী (১৩) বিশ্বহরিগাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ে আসা–যাওয়ার পথে বখাটে অপূর্ব প্রায়ই তাকে কুপ্রস্তাব দিতেন এবং বিভিন্ন ভাবে উত্ত্যক্ত করতেন। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে অপূর্ব নাবালিকা মেয়েটিকে তুলে নেওয়ার হুমকি দেন। বিষয়টি মেয়েটি তার বাবাকে জানালে তিনি অপূর্বকে সতর্ক করেও কোনো ফল পাননি।

গত ১ ডিসেম্বর বিকেল ৩টার দিকে বিশ্বহরিগাছা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে ফাঁকা রাস্তায় ওঁত পেতে থাকা অপূর্ব ও তার সহযোগীরা মেয়েটির পথরোধ করে। পরে একটি অজ্ঞাত সিএনজিতে জোরপূর্বক তুলে ধুনটের উদগাড়ী বিলের নির্জন এলাকায় নিয়ে যায়।

সেখানে চাষাবাদি জমির ভেতর ভয়ভীতি দেখিয়ে অপূর্ব শিশুটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। নির্যাতনের একপর্যায়ে মেয়েটি জ্ঞান হারালে তাকে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায় আসামিরা।

স্থানীয় সালমান শাহ নামে এক যুবক রাস্তার পাশে অচেতন অবস্থায় মেয়েটিকে দেখতে পেয়ে পরিবারের কাছে খবর দেন। এরপর শিশুটিকে প্রথমে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে গুরুতর অবস্থায় বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক) পাঠানো হয়। বর্তমানে সেখানেই সে চিকিৎসাধীন।

ঘটনার পরদিন অপূর্বের চাচা ও স্থানীয় বিএনপির সভাপতি দুলাল খাঁসহ কতিপয় প্রভাবশালী পরিবারটির কাছে সমঝোতার প্রস্তাব দেন। তারা অপূর্বের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মামলা না করতে চাপ দেয় তারা। এজাহারে বলা হয়, ২ ডিসেম্বর সকাল ৭টায় অপূর্বের বাড়িতে মেয়েটিকে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে পড়ানো হয়।

পরবর্তী ৪ ডিসেম্বর, বিয়ের দুই দিনের মাথায় অপূর্ব মেয়েটিকে তালাক দেওয়ার হুমকি দেন। এতে মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে শিশুটিকে আবারো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় ১০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন ধর্ষক অপূর্ব, তার সহযোগীরা হলো আশিক সরকার, নিলয়, জাকারিয়া, রামিম, আবু সাইদ, কামাল সরকার, আব্দুস সালাম, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি দুলাল খাঁ এবং শাহেদ।  তাদের সবাই ধুনটের চৌকিবাড়ী ইউনিয়নের বিশ্বহরিগাছা ও বহালগাছা এলাকার বাসিন্দা।

ধনুট উপজেলা বিএনপি'র সভাপতি তৌহিদুল আলম মামুন বলেন, মামলাটি যড়যন্ত্র মূলক। যেহেতু তারা ঘর-সংসার করছে এখানে এলাকার মুরব্বীদের জড়ানো ঠিক হয়নি। 

ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদুল আলম জানান, এজাহারটি গ্রহণ করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর ডাক্তারি পরীক্ষা, প্রাথমিক সাক্ষ্যগ্রহণ এবং ঘটনার তদন্ত চলছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

No comments