শিরোনাম

বগুড়ায় মামলার আসামি আ.লীগ নেতা—তবু অফিসে দিব্যি কর্মরত! প্রশাসন কি নীরব পাহারাদার?

ইসমাইল প্রতীম, বগুড়া প্রতিনিধিঃ

বগুড়ায় ক্ষমতাসীন দলের পদধারী এক নেতার বিরুদ্ধে থানায় মামলা থাকা সত্ত্বেও তিনি এখনও কর্মস্থলে বহাল তবিয়তে দায়িত্ব পালন করছেন—এ ঘটনা রাজনৈতিক বলয় থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কি রাজনৈতিক নেতাদের নিরাপদ ছাতা হয়ে উঠছে—সেই সন্দেহও উঁকি দিচ্ছে। গ্রেফতার না হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বগুড়া সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের নকল নবীশ কামরুল হাসান শেখ রিপন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন মৎস্যজীবী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ৭নং সহ-সভাপতি। তার নামে বগুড়া সদর থানায় জুলাই–আগস্ট মাসে মামলা রয়েছে। কিন্তু গ্রেফতারের কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

স্থানীয় সূত্র বলছে, মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও রিপন প্রতিদিনের মতো অফিসে উপস্থিত থাকছেন। কর্মস্থলে তার অবস্থান কি “ম্যানেজমেন্টের জাদু”?—তা নিয়েও জনমনে গুঞ্জন চলছে।

মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, “মামলার কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে আমাদের বাধা নেই। যাচাই–বাছাই চলছে।” তার এই বক্তব্য আরও প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে—যাচাই–বাছাই চলাকালীন আসামিদের গ্রেফতার কেন থেমে আছে?

বিষয়টি নিয়ে কামরুল হাসান শেখ রিপন বলেন, “আমি পদধারী নেতা ছিলাম, কিন্তু আমি কোটা সংস্কার আন্দোলনে কখনোই ছাত্রদের বিপক্ষে ছিলাম না।” তিনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং নিজেকে ‘ভুল বোঝাবুঝির শিকার’ হিসেবে দাবি করেন।

বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান বাশিরের সরকারি মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এতে প্রশাসনিক উদাসীনতা নিয়ে অনেকে নতুন করে প্রশ্ন তুলছেন।

বিষয়টি জানতে চাইলে সদ্য যোগদান করা পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন বলেন, “যদি তিনি এজাহারনামীয় আসামি হন—তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পদধারী হোক বা না হোক—গ্রেফতার করতে পুলিশের কোনো বাধা নেই। কেন গ্রেফতার হয়নি, তা আমি খতিয়ে দেখব।”

বগুড়ায় ক্ষমতাসীন দলের পদধারী নেতা মামলার আসামি হয়েও দাপ্তরিক কাজে নির্বিঘ্নে অফিস করছেন—এমন নজির সাধারণ প্রশাসন–ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা প্রশ্নবিদ্ধ করছে। পুলিশের তদন্ত কতটা এগোয়, আদৌ গ্রেফতার হয় কি না—এখন সেদিকেই দৃষ্টি জনতার।

No comments