শিরোনাম

সেউজগাড়ীতে খোকন হত্যা: ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা, এজাহারে রয়েছে সাংবাদিক পুত্র

বগুড়া প্রতিনিধিঃ

বগুড়া শহরের সেউজগাড়ী এলাকায় ইসকন মন্দিরের সামনে সংঘটিত হাবিবুর রহমান খোকন (৩৭) হত্যাকাণ্ডে ২৫ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। একই ঘটনায় গুরুতর জখম অবস্থায় খোকনের বন্ধু বাধন শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছেন।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে খোকন ও বাধন মোটরসাইকেলে করে সাবেক ছাত্রদল নেতা পাভেলকে দেখতে সেউজগাড়ী পালপাড়া এলাকায় যাওয়ার পথে চারদিক থেকে সন্ত্রাসীদের একটি দল তাদের ঘিরে ফেলে। মুহূর্তের মধ্যে রামদা ও হাসুয়ার আঘাতে তাদের ওপর এলোপাতাড়ি কোপানো শুরু হয়। মাথা, হাত, পা—সব জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। ধারাবাহিক কোপের বর্ণনা স্থানীয়দের শিউরে ওঠার মতো।

খোকন মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে খোকন ও বাধনকে অটোতে করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক খোকনকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত হাবিবুর রহমান খোকন মালতিনগর দক্ষিণপাড়া এলাকার আবুল কালাম আজাদের ছেলে। তিনি পেশায় রেন্ট-এ-কার ব্যবসায়ী ছিলেন। নিহত খোকন বগুড়া পৌরসভার ১১নং ওয়ার্ড যুবদলের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন।

মামলার এজাহার অনুযায়ী যারা হলেন খোকন হত্যার আসামী, ১ নাম্বার আসামী হিসেবে রয়েছেন বগুড়া সদরের কৈচর এলাকার ও সেউজগাড়ী এলাকার অস্থায়ী বাসিন্দা ফটুর ছেলে মুন্না (২৫), ২ নাম্বার আসামী হিসেবে রয়েছেন বগুড়া সদরের সেউজগাড়ী বগুড়া নার্সিং হোম এলাকার খোকনের ছামিউল (৩২), ৩ নাম্বার আসামী হলেন বগুড়া সেউজগাড়ী রেলওয়ে মাঠ সংলগ্ন এলাকার শাজাহান আলীর ছেলে রকি (৩২), সেউজগাড়ী, রেলওয়ে মাঠ সংলগ্ন এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে সিয়াম (২৩), সেউজগাড়ী, রেলওয়ে মাঠ সংলগ্ন ছাইফুলের ছেলে সাগর (২৫), সেউজগাড়ী, রেলওয়ে মাঠ সংলগ্ন এলাকার মৃত ওকিমুদ্দিন, পালিত পিতা-শহিদুল ইসলামের ছেলে ধলা (২৪) ও মেহেদী (২১), বগুড়া সদরের চকসূত্রাপুর এলাকার মজাফফরের ছেলে কাকন (২৫), সেউজগাড়ী, রেলওয়ে মাঠ সংলগ্ন, এলাকার জিল্লার রহমানের ছেলে মহিন (২১), কৈচর এলাকারা আবু সাইদের ছেলে শাহিন (২৬), সেউজগাড়ী, রেলওয়ে মাঠ সংলগ্ন এলাকার আইনুলের ছেলে শাওন (২৫), ছিলিমপুর এলাকার ফটিকের ছেলে শুভ (৩০), নারুলী দক্ষিণপাড়া এলাকার মৃত ছামছুল প্রাং এর ছেলে শুভ আল ইমরান (২৫), শাজাহানপুর উপজেলার জালশুকা গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে রাশেদ (২২), শাজাহানপুর উপজেলার চকলোকমান উল্কা মাঠ এলাকার শহিদুল ইসলামের ছেলে ফেরদৌস (২৪), বগুড়া সদরের জামিলনগর এলাকার সাইদুল ইসলামের ছেলে নান্টু (২৫) এবং বগুড়ার স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক করতোয়ার সাংবাদিক সেউজগাড়ী পালপাড়া এলাকার মাসুদুর রানার ছেলে রাফিদ (২২) সহ আরও ৭ থেকে ৮ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়।

খোকনের স্ত্রী ফারজানা আক্তার আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, “ওরা মানুষ নয়, ওরা আমার স্বামীকে ওরা টুকরো টুকরো করে ফেলেছে।” তিনি দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান বাশির জানান,“থানায় মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। এছাড়া ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের পরিচয় শনাক্তের কাজ চলছে। খুব দ্রুতই আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।”

No comments