বেরোবিতে ‘ইউসিএফ’-এর আত্মপ্রকাশ, নেতৃত্বে মাইদুল-নিরব-জেবিন
রুশাইদ আহমেদ, বেরোবিঃ
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) “ঐক্যের রঙে, সৃজনের পথে” -এই মূল মন্ত্রকে সামনে রেখে ‘ইউনাইটেড কালচারাল ফোরাম (ইউসিএফ)’ আত্মপ্রকাশ করেছে এক নতুন সাংস্কৃতিক সংগঠন। সংগঠনটির নেতৃত্বে এসেছেন মোঃ মাইদুল ইসলাম (বাপ্পী), মোঃ নাইমুল ইসলাম নিরব এবং উম্মে জেবিন।
সংগঠকদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাংস্কৃতিক ঐক্য ও সৃজনশীলতার বিকাশের লক্ষ্য নিয়ে এই সংগঠনটি যাত্রা শুরু করেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে দেশ ও বিদেশের কাছে তুলে ধরার এক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
সংগঠনটির সংশ্লিষ্টরা জানান, ‘ইউনাইটেড কালচারাল ফোরাম (ইউসিএফ)’ মূলত একটি অরাজনৈতিক, অলাভজনক এবং সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাসেবী প্ল্যাটফর্ম। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিদ্যমান সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে সম্মান জানানো এবং বিভিন্ন সংস্কৃতির মেলবন্ধনে একটি শক্তিশালী ও সৃজনশীল পরিবেশ তৈরি করা।
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি পারস্পরিক সাংস্কৃতিক বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি করে সঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তি, বিতর্ক, অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, লেখালেখিসহ বিভিন্ন সৃজনশীল ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার উপযুক্ত মঞ্চ তৈরি করা।
পাশাপাশি, বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতি, ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং রংপুর অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলা ও সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্ম ও বিশ্ববাসীর কাছে প্রচার করবে সংগঠনটি। একইসঙ্গে, বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক উদ্যোগে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধ ও দায়িত্বশীলতার চেতনাকে জাগ্রত করতে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে জানান সংগঠকরা।
সংগঠনের সভাপতি মোঃ মাইদুল ইসলাম (বাপ্পী) বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি যে ‘উত্তরের বাতিঘর’ খ্যাত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে ব্যাপকভাবে পিছিয়ে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক পরিবেশকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের এই উদ্যোগ।
তিনি বলেন, আমরা ইউনাইটেড কালচারাল ফোরামের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী দিনগুলোতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উৎসব, প্রতিযোগিতা, কর্মশালা এবং সেমিনার আয়োজনের পরিকল্পনা করেছি। এতে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই নয়, বরং স্থানীয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও বিশেষজ্ঞরাও অংশ নিতে পারবেন। আমরা চাই, আমাদের প্রতিটি সদস্য যেন তার নিজস্ব সৃজনশীলতাকে নির্ভয়ে প্রকাশ করার সুযোগ পায়। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতিমনা শিক্ষার্থীরা সহজেই এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন এবং তাদের মেধার বিকাশ ঘটাতে পারবেন। এছাড়াও, এর মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সাংস্কৃতিক চর্চা বিনিময়ের মাধ্যমে সম্পর্ক স্থাপিত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাইমুল ইসলাম নিরব বলেন, আজ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে 'ইউনাইটেড কালচারাল ফোরাম' (UCF)-এর শুভ সূচনা ঘোষণা করতে পেরে আমরা গভীর আনন্দ ও উৎসাহ অনুভব করছি। আমি বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তি হয়ে আসার পর থেকে হতাশ লাগতো এই ভেবে যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কালচারাল দিক থেকে অনেক পিছিয়ে। আমাদের সংগঠনের মূল কাজ হবে আগামীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে 'বেরোবিজম' সেটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

No comments