শিরোনাম

বগুড়ায় ত্রাসের রাজত্ব রতন সুমন গ্যাংয়ের, ভয় ছড়াচ্ছে ঘরে ঘরে!

বগুড়া প্রতিনিধিঃ

বগুড়ার অপরাধ জগতে নতুন আতঙ্কের নাম ‘রতন সুনম গ্যাং’। একসময় সাধারণ ছিনতাই থেকে শুরু করে এখন তারা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, মাদক ও হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই গ্যাংয়ের নেতৃত্বে রয়েছেন আপন তিন ভাই—রতন, সুমন ও রাহুল।

তিন ভাইয়ের বাড়ি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মালতীনগর স্টাফ কোয়ার্টার বটতলার দক্ষিণপাড়া গ্রামে। 

রতন ও তার ভাইরা নিজেদের গ্যাংয়ের নাম দিয়েছে ‘কোবরা’। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তারা নিজেদের সদস্যদের মধ্যে সামরিক ধাঁচে কাজ ভাগ করে দেয়—কেউ মাদক ব্যবসা দেখাশোনা করে, কেউ চাঁদাবাজির টাকা তোলার দায়িত্বে থাকে, আবার কেউ এলাকায় ভয়ভীতি ছড়ায়।

রতনের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর ও শাজাহানপুর থানায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, অস্ত্র, মাদক, ডাকাতি ও চাঁদাবাজিসহ অন্তত নয়টি মামলা রয়েছে।

১. শাজাহানপুর থানা, এফআইআর নং-৩৫ (২৮ জানুয়ারি ২০২৩) — হত্যা চেষ্টা, অস্ত্র ও সন্ত্রাস আইনে মামলা

২. বগুড়া সদর থানা, এফআইআর নং-৩২ (০৬ আগস্ট ২০১৭) — মারামারি ও প্রাণনাশের হুমকি

৩. সদর থানা, এফআইআর নং-৫৫ (২২ জুন ২০২৫) — ডাকাতি

৪. সদর থানা, এফআইআর নং-৬৪ (২০ মার্চ ২০২৩) — মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন

৫. সদর থানা, এফআইআর নং-৩৮ (১৭ নভেম্বর ২০২০) — সংঘবদ্ধ হামলা ও চাঁদাবাজি

৬. সদর থানা, এফআইআর নং-২৩ (০৯ নভেম্বর ২০২১) — অস্ত্রসহ হামলার অভিযোগ

৭. সদর থানা, এফআইআর নং-২৪ (০৯ নভেম্বর ২০২১) — গুরুতর আহত করার মামলা

৮. শাজাহানপুর থানা, এফআইআর নং-৬ (০৭ ডিসেম্বর ২০২৩) — হত্যা ও ডাকাতি মামলা

৯. সদর থানা, এফআইআর নং-৩১ (১১ অক্টোবর ২০১৩) — হত্যা মামলা

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোস্তফা মঞ্জুর বলেন, “রতন সুনম গ্যাং কিছুদিন নিষ্ক্রিয় ছিল, কারণ রতন র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাগারে ছিল। সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়েই সে আবার পুরনো নেটওয়ার্ক চালু করেছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে তাদের গতিবিধি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। খুব শিগগিরই রতন ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হবে।”

স্থানীয়রা জানান, রতন ও তার গ্যাং এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করছে। যার জন্য এলাকারা সাধারণ জনগনের ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। রাত নামলেই বটতলা ও আশপাশের এলাকায় তরুণদের জটলা দেখা যায়, যাদের অনেকেই রতনের অনুসারী বলে দাবি করছে স্থানীয়রা।

একজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “চাঁদা না দিলে দোকানে হামলা হয়। পুলিশে বললে পরে আরও বিপদে পড়তে হয়।”

বগুড়া জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, রতন সুনম গ্যাংয়ের অবস্থান, সহযোগী ও অর্থনৈতিক উৎস চিহ্নিত করা হয়েছে। গোপন নজরদারিতে রয়েছে তাদের প্রতিটি পদক্ষেপ। পুলিশের দাবি, “এই গ্যাং ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

No comments