শিরোনাম

সীমান্তে থামছে না মাদকের স্রোত: লালমনিরহাটে শতাধিক বড় ব্যবসায়ী সক্রিয়!

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ

দফায় দফায় অভিযান, অসংখ্য মামলা ও প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের পরও থামছে না মাদকের ভয়াল বিস্তার লালমনিরহাটের সীমান্ত ঘেঁষা গ্রামগুলোতে।

বিশেষ করে সীমান্তবর্তী ইউনিয়নগুলোতে এখন রীতিমতো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাদক ব্যবসায়ীরা। মাত্র একটি ইউনিয়নেই সক্রিয় শতাধিক বড় মাদক ব্যবসায়ী, যাদের অনেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিও বলে জানা গেছে। একেকজনের বিরুদ্ধে রয়েছে ১৪ থেকে ১৫টি পর্যন্ত মামলা।

ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা লালমনিরহাট জেলার পাঁচটি উপজেলাই সীমান্তবর্তী। দীর্ঘদিন ধরেই এসব এলাকাকে ব্যবহার করা হচ্ছে মাদক পাচারের রুট হিসেবে। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ও চন্দ্রপুর ইউনিয়নে। কালীগঞ্জ থানা থেকে অনেকটা দূরে হওয়ায় ২০২১ সালে গোড়ল ইউনিয়নে একটি তদন্ত কেন্দ্র স্থাপন করা হলেও, আশপাশের এলাকা পরিণত হয়েছে মাদক পাচারের নিরাপদ ঘাঁটিতে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই রুটে ফেনসিডিল, ট্যাপেন্টাডল, গাঁজা, ইয়াবা, ভারতীয় মদ ও স্কাফ সিরাপসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক নিয়মিত পাচার হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ করা হচ্ছে, গ্রেপ্তার হচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও। তবে তারা জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও পুরোনো ব্যবসায় ফিরে যাচ্ছেন। ফলে প্রশাসনের অব্যাহত অভিযানও কাঙ্ক্ষিত ফল আনতে পারছে না।

স্থানীয় সূত্র জানায়, অনেক মাদক ব্যবসায়ী ইতোমধ্যে গরিব থেকে কোটিপতি বনে গেছেন। কেউ কেউ গড়েছেন আলিশান বাড়ি, কিনেছেন দামি গাড়ি, জমিজমা। এতে সমাজে তৈরি হচ্ছে এক শ্রেণির অন্ধকার ধনী শ্রেণি, যাদের প্রভাব-প্রতিপত্তিতে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, “মাদক নিয়ন্ত্রণে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন কর্মসূচি চালানো হচ্ছে। মাদক প্রতিরোধে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।”

সাধারণ মানুষ এখন মাদকমুক্ত সমাজের প্রত্যাশায় দিন গুনছে, তবে প্রশাসনের পাশাপাশি জনসচেতনতা ছাড়া এ বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া কতটা সম্ভব— সেই প্রশ্ন রয়ে গেছে সবার মনে।

No comments