শিরোনাম

এমপিও ভুক্ত নয়, তবুও চলছে নিয়োগ: অস্তিত্বহীন মাদ্রাসায় প্রতারণার অভিযোগ!

 

বগুড়া প্রতিনিধিঃ

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার জামাটা এলাকায় আলোচনায় এসেছে এক রহস্যজনক প্রতিষ্ঠান— নুরুল আলা নুর এবতেদায়ী মাদ্রাসা। প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব না থাকলেও, এমপিও ভুক্তির মিথ্যা আশ্বাসে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে মাহফুজার রহমান সরকার নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, মাদ্রাসাটি ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত বলে দাবি করা হলেও সরেজমিনে এর কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। অথচ সম্প্রতি পাঁচজন শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ভুক্তভোগীদের দাবি— এমপিও ভুক্তির আশ্বাসে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়, তবে বেতন দেওয়া হবে এমপিও অনুমোদনের পর থেকে।

সহকারী শিক্ষিকা মিতানুর আক্তার মিতা বলেন, “আমাদের বলা হয়েছে, মাদ্রাসাটি খুব শিগগিরই এমপিও ভুক্ত হবে। এর আগ পর্যন্ত বিনা বেতনে কাজ করতে হবে। আমরা ভেবেছি— আমাদের পরিশ্রম দিয়ে যদি একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে, তাহলে সেটা ভবিষ্যতের জন্য ভালো হবে।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, আমাকে প্রথমে নিয়োগ বিষয়ে বলা হয়েছে। আমি নিয়োগ পেয়েছি। তবে এখন আমার থেকে মোটা অংকের টাকা দাবী করেন মাহফুজার রহমান সরকার। আমি টাকা দিবো না বললে, তিনি আমার নিয়োগ বাতিল করবার হুমকিও দিয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নিয়োগ কমিটির প্রধান পরিচিত মাহফুজার রহমান সরকার বলেন,“আমি কখনো কাউকে এমপিও ভুক্তির নামে নিয়োগ দিইনি। আমি আসলে ওই মাদ্রাসার সঙ্গে সরাসরি যুক্তও নই। তবে আশা করছি মাদ্রাসাটি শিগগিরই এমপিও ভুক্ত হবে।”

শাজাহানপুর উপজেলা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন,“নুরুল আলা নুর নামে কোনো মাদ্রাসার অস্তিত্ব নেই। কেউ যদি প্রতিষ্ঠান গড়তে চায়, সেটা ভালো উদ্যোগ। কিন্তু মিথ্যা আশ্বাসে নিয়োগ দিয়ে টাকা খাওয়া স্পষ্ট প্রতারণা।”

শাজাহানপুর উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হাসান বলেন,“নুরুল আলা নুর এবতেদায়ী মাদ্রাসার নাম "ইআইআইএন" তালিকায় থাকলেও সরেজমিনে কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। মাদ্রাসাটি এমপিও ভুক্ত নয় এবং নিকট ভবিষ্যতে হওয়ার সম্ভাবনাও কম। কেউ যদি এমপিও ভুক্ত হয়েছে ভেবে নিয়োগ নিয়ে থাকে, তবে তারা প্রতারিত হয়েছে।”

অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে নিয়োগ বাণিজ্য শুধু প্রতারণাই নয়, শিক্ষাক্ষেত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি— দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক, নইলে আরও বহু তরুণ প্রতারণার ফাঁদে পড়বে।

No comments