শিরোনাম

গণতন্ত্র শক্তিশালী করে জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : প্রধান উপদেষ্টা

 


অনলাইনঃ

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেছেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকার কঠোর পরিশ্রম করছে, যাতে জনগণের হাতে প্রকৃত ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়। তিনি বলেন, “আমরা গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে এবং ক্ষমতার প্রকৃত মালিক জনগণের হাতে তা ফিরিয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

বুধবার (১২ আগস্ট) মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব মালয়েশিয়া (ইউকেএম) থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও নেগেরি সেমবিলান দারুল খুসুল রাজ্যের সুলতান তুংকু মুহরিজ ইবনি আলমারহুম তুংকু মুনাওয়িরের কাছ থেকে তিনি এই সম্মাননা গ্রহণ করেন। সামাজিক ব্যবসা প্রসারে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।

ড. ইউনুস বলেন, “এই স্বীকৃতি আমাকে তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। গত বছর বাংলাদেশের বহু তরুণ সাহসিকতার সঙ্গে একটি ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। শত শত ছাত্র-যুবক একটি উন্নত ভবিষ্যতের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছে, যেখানে মর্যাদার সঙ্গে বাঁচা যাবে এবং ভয়, বৈষম্য ও অবিচার থেকে মুক্ত থাকা যাবে।”

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে তরুণদের নেতৃত্বে সংঘটিত অভ্যুত্থানের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এটি আমাদের জাতীয় পরিচয় ও ভবিষ্যতের আশার নতুন অর্থ তৈরি করেছে। আমরা এখন এমন এক বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছি, যেখানে শাসনব্যবস্থা হবে ন্যায়সঙ্গত, অর্থনীতি হবে সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রত্যেকে সমান সুযোগ পাবে সফল হওয়ার জন্য। আমাদের সরকার শাস্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সংস্কারকেও সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে।”

তিনি বলেন, “একটি শক্তিশালী ও সহনশীল বাংলাদেশ গড়তে অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন প্রয়োজন—এর মধ্যে রয়েছে উদ্যোক্তাদের সহায়তা, শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা।”


এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি পূরণে ধাপে ধাপে উদ্যোগ : শিক্ষা উপদেষ্টা

শিক্ষা উপদেষ্টা সি. আর. আবরার জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকার একসঙ্গে সব এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করতে পারবে না। এটি অত্যন্ত জটিল ও চ্যালেঞ্জিং বিষয়, যা কেবল নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারই করতে সক্ষম। তবে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ও চিকিৎসাভাতা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য যৌক্তিক দাবি বিবেচনা করা হবে।

তিনি জানান, বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাসে বাড়িভাড়া বাবদ এক হাজার টাকা এবং চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা পান। শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রস্তাব করেছে বাড়িভাড়া আরও এক হাজার টাকা বাড়িয়ে দুই হাজার টাকা এবং চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করার জন্য, যা ইতিমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

শিক্ষকদের সর্বজনীন বদলির দাবিতে তাৎক্ষণিকভাবে ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া বাড়িভাড়া ও চিকিৎসাভাতা বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) ২০২৩ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে বর্তমানে ২৬ হাজার ৪৪৭টি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষক এবং ১ লাখ ৭৭ হাজার কর্মচারী কর্মরত আছেন।

বুধবার সকাল থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মহাসমাবেশ করেন, যেখানে ৬৪ জেলার কয়েক হাজার শিক্ষক অংশ নেন। সমাবেশ শেষে সচিবালয়ে পদযাত্রার কথা থাকলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক ইতিবাচক হওয়ায় বিকেলে সমাবেশ সমাপ্ত ঘোষণা করেন তারা।

No comments