বগুড়ায় আওয়ামী লীগের পক্ষ নিয়ে অনলাইন থেকে সংবাদ ডিলিট করতে সাংবাদিককে ফোন দিলেন বিএনপি নেতা
স্টাফ রিপোর্টারঃ
বগুড়ায় ক্ষমতাহীন আওয়ামী লীগের পক্ষে সংবাদ প্রকাশের পর সেটি অনলাইন থেকে সরাতে সরাসরি সাংবাদিককে গভীর রাতে ফোন দিয়েছেন এক বিএনপি নেতা। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল পদে থাকা ওই নেতার এমন পদক্ষেপ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষতার প্রশ্ন তোলে।
ঘটনাটি ঘটে বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কক্ষে আওয়ামী লীগের সভাপতির সঙ্গে গোপন বৈঠকের খবর প্রকাশের পর। সংবাদ প্রকাশের পর বগুড়া শহর বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক, ১০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং একই প্রতিষ্ঠানের উপাধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান রজিব ফোনে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে বলেন— “আমরা ইতিমধ্যেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। আপনি সংবাদটি ডিলিট করুন, এতে প্রতিষ্ঠানটির মান ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। যদিও আমি বিএনপি করি, তবুও আমার পক্ষ নেওয়া ঠিক হচ্ছে না। আপনার কাছে অনুরোধ রইলো সংবাদটি সরিয়ে নিন।”
যে সাংবাদিককে সংবাদ মুছে ফেলার অনুরোধ জানানো হয়, তিনি এই প্রতিবেদনেরই প্রতিবেদক—দৈনিক আমার বার্তা পত্রিকার বগুড়া মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার, স্থানীয় অনলাইন পোর্টাল চ্যানেল টেন এবং জাতীয় দৈনিক আজকের বসুন্ধরা রাজশাহী ব্যুরো চিফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি তিনটি মাধ্যমেই সংবাদটি প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা এবং জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য দেননি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষমতাহীন ও বিরোধী উভয় দলের প্রভাবের অধীনে রয়েছে। তবে একজন বিরোধী দলের নেতা যখন সরাসরি সাংবাদিককে ফোন করে সংবাদ মুছে ফেলতে বলেন, তখন তা কেবল গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ নয়, বরং জনস্বার্থ ও স্বচ্ছতার পরিপন্থী।
তাদের মতে, এমন ঘটনা সংবাদমাধ্যমকে ভয় দেখানো ও চাপে ফেলার পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষ ভাবমূর্তিকে গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং রাজনৈতিক স্বার্থে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ব্যবহার করার প্রবণতা আরও বাড়িয়ে তোলে।

No comments