শিরোনাম

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ ৫ আগস্ট

 


অনলাইন ড্রেক্সঃ

জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া চূড়ান্ত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ৪ আগস্ট বিকাল ৫টায় গণঅভ্যুত্থানের সব পক্ষের উপস্থিতিতে জুলাই ঘোষণাপত্র রে জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে। গতকাল শনিবার দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। এদিকে, আগামী ৫ আগস্টের মধ্যেই জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান। মাহফুজ আলম লেখেন, জুলাই ঘোষণাপত্র এখন বাস্তবতা। ৫ আগস্টের মধ্যেই ঘোষিত হবে ঘোষণাপত্র। ঘোষণাপত্র ইস্যুকে গণআকাঙ্ক্ষায় বাঁচিয়ে রেখে এটা বাস্তবায়নের পথ সুগম করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে অন্যতম আলোচিত বিষয় এই জুলাই ঘোষণাপত্র। অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি সামনে রেখে সম্প্রতি জুলাই ঘোষণাপত্রের চূড়ান্ত খসড়া বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বিভিন্ন দলকে পাঠিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

খসড়া ঘোষণাপত্রে ২৬ দফায় যা রয়েছে-

১। যেহেতু, এই ভূখণ্ডের মানুষ দীর্ঘ ২৩ বছর পাকিস্তানের স্বৈরশাসকদের বঞ্চনা ও শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল এবং নির্বিচার গণহত্যার বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে জাতীয় মুক্তির জন্য রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিল।


২। যেহেতু, বাংলাদেশের আপামর জনগণ দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই ভূখণ্ডে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বিবৃত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের ভিত্তিতে উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছে।


৩। যেহেতু, স্বাধীন বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের সংবিধানের পদ্ধতি ও কাঠামোগত দুর্বলতা ও অপপ্রয়োগের ফলে স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধের জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছিল এবং গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতা ক্ষুন্ন করেছিল।


৪। যেহেতু, স্বাধীনতা-পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার স্বাধীনতার মূলমন্ত্র গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার বিপরীতে বাকশালের নামে সাংবিধানিকভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে এবং মতপ্রকাশ ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করে, যার প্রতিক্রিয়ায় ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর দেশে সিপাহী জনতার ঐক্যবদ্ধ বিপ্লব সংঘটিত হয়।


৫। যেহেতু, আশির দশকে সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ নয় বছর ছাত্র-জনতার অবিরাম সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয় এবং ১৯৯১ সালে পুনরায় সংসদীয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়।


৬। যেহেতু, দেশি-বিদেশি চক্রান্তে সরকার পরিবর্তনের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ায় ১-১১-এর ষড়যন্ত্রমূলক বন্দোবস্তের মাধ্যমে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার একচ্ছত্র ক্ষমতা, আধিপত্য ও ফ্যাসিবাদের পথ সুগম করা হয়। ৭। যেহেতু, গত দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী, অগণতান্ত্রিক এবং গণবিরোধী শাসনব্যবস্থা কায়েমের লক্ষ্যে এবং একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার অতি উগ্রবাসনা চরিতার্থ করার অভিপ্রায়ে সংবিধানের অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক পরিবর্তন করা হয় এবং যার ফলে একদলীয় একচ্ছত্র ক্ষমতা ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।


৮। যেহেতু, বিগত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসন, গুম-খুন, আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ এবং একদলীয় স্বার্থে সংবিধান সংশোধন ও পরিবর্তন বাংলাদেশের সব রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে।


৯। যেহেতু, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে তারই নেতৃত্বে একটি চরম গণবিরোধী, একনায়কতান্ত্রিক ও মানবাধিকার হরণকারী শক্তি বাংলাদেশকে একটি ফ্যাসিবাদী, মাফিয়া এবং ব্যর্থ রাষ্ট্রের রূপ দিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণন করে।


১০। যেহেতু, তথাকথিত উন্নয়নের নামে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকারের নেতৃত্বে সীমাহীন দুর্নীতি, ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো ফাংসের মধ্য দিয়ে বিগত পতিত দুর্নীতিবাজ আওয়ামী সরকার বাংলাদেশ ও এর অমিত অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে বিপর্যস্ত করে তোলে এবং এর পরিবেশ, প্রাণবৈচিত্র্য ও জলবায়ুকে বিপন্ন করে।


১১। যেহেতু, শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দল, ছাত্র ও শ্রমিক সংগঠনসহ সমাজের সর্বস্তরের জনগণ গত প্রায় ১৬ বছর ধরে নিরস্তর গণতান্ত্রিক সংগ্রাম করে জেল-জুলুম, হামলা-মামলা, গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়।


১২। যেহেতু, বাংলাদেশে বিদেশি রাষ্ট্রের অন্যায় প্রভুত্ব, শোষণ ও খবরদারত্বের বিরুদ্ধে এ দেশের মানুষের ন্যায়সংগত আন্দোলনকে বহি-স্নশক্তির তাঁবেদার আওয়ামী লীগ সরকার নিষ্ঠুর শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে দমন করে


১৩। যেহেতু, অবৈধভাবে ক্ষমতা অব্যাহত রাখতে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার তিনটি প্রহসনের নির্বাচনে (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪-এর জাতীয় সংসদ নির্বাচন) এ দেশের মানুষকে ভোটাধিকার ও প্রতিনিধিত্ব থেকে বঞ্চিত করে।


১৪। যেহেতু, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ আমলে ভিন্নমতের রাজনৈতিক নেতাকর্মী, শিক্ষার্থী ও তরুণদের নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করা হয়। সরকারি চাকরিতে একচেটিয়া দলীয় নিয়োগ ও কোটাভিত্তিক বৈষম্যের কারণে ছাত্র, চাকরিপ্রত্যাশী এবং নাগরিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের জন্ম হয়।


১৫। যেহেতু, বিরোধী রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের ওপর চরম নিপীড়নের ফলে দীর্ঘদিন ধরে জনরোষের সৃষ্টি হয় এবং জনগণ সব বৈধ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াই চালিয়ে যায়।


১৬। যেহেতু, সরকারি চাকরিতে বৈষম্য বিলোপ ও দুর্নীতি প্রতিরোধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার ব্যাপক দমন-পীড়ন, বর্বর অত্যাচার ও মানবতাবিরোধী হত্যাকাণ্ড চালানো হয়, যার ফলশ্রুতিতে সারা দেশে দলমত নির্বিশেষে ছাত্র-জনতার উত্তাল গণবিক্ষোভগণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়।


এর মাধ্যমেই দেশকে আমরা বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থে যেখাে ঐক্য এখনো অটুট আছে জানিে দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য ছিল। আমি তো কোনো অনৈক্য দেখতে চিন্তাভাবনা থাকবে। যেখানে আ হবো। বাকিটা জনগণের কাছে তাদের কাছে নিয়ে যেতে হবে হবে।




No comments