বাংলাদেশের পাসপোর্টের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক দেশের দরজা
অনলাইন ড্রেক্সঃ
বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে বিশ্ব। একের পর এক দেশ বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া কঠিন করে তুলছে, এমনকি অনেক দেশ ভিসা দেওয়া সাময়িকভাবে বন্ধও করে দিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) সূত্র জানায়, বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের অপরাধপ্রবণতা, অনিয়মিত অভিবাসন ও ভিসা শর্ত লঙ্ঘনের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়া গত তিন বছর ধরে বাংলাদেশিদের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধ রেখেছে। কারণ দেশটি হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় মানবপাচারের প্রবণতা বাড়ছিল। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হলেও এখনো পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। একইভাবে, ভিয়েতনামও ট্যুরিস্ট ভিসা বন্ধ করেছে, কারণ অনেকে ভিসার মেয়াদ শেষেও দেশে ফেরেনি। কেউ কেউ অবৈধভাবে অন্য দেশে চলে গেছে।
মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান শ্রমবাজার সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), ওমান এবং মালয়েশিয়াও বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা দেওয়া স্থগিত রেখেছে। ইতালির কাজের ভিসা পেতে দীর্ঘ অপেক্ষা এবং জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ায় চাহিদা অনুযায়ী কর্মী পাঠানো যাচ্ছে না।
কম্বোডিয়ায় প্রবেশের জন্যও বাংলাদেশিদের পেরোতে হয় দীর্ঘ প্রক্রিয়া। দেশটির জনপ্রিয় পর্যটন শহর সিয়েম রিপে যাওয়ার আগ্রহ থাকলেও কঠোর নিয়মের কারণে তা হয়ে উঠছে কঠিন। থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াতেও ভিসা প্রক্রিয়া জটিল হয়ে পড়েছে। আগে সহজে ভিসা পাওয়া গেলেও এখন বারবার আবেদন বাতিল হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও সেনজেনভুক্ত দেশগুলোতেও বাংলাদেশিদের ভিসা আবেদন নিয়মিতভাবে প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে। এদিকে ভারতের ভিসা কার্যক্রমও রাজনৈতিক কারণে এখনো বন্ধ।
সম্প্রতি জনপ্রিয় গন্তব্য উজবেকিস্তান হঠাৎ করেই বাংলাদেশের নাম ইলেকট্রনিক ভিসার তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে।
টোয়াবের সভাপতি মোহাম্মদ রাফিউজ্জামান বলেন, “ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ছাড়াও দুবাই, উজবেকিস্তান, ইজিপ্ট, কুয়েত, বাহরাইন, ওমান ও কাতারে ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।”
তবে এখনো কিছু দেশে তুলনামূলক সহজে ভিসা পাওয়া যাচ্ছে, যেমন: নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, “ভিসা সংকটে আমরা নিজেরাও দায়ী। যেভাবে নিয়ম না মেনে মানুষ বিদেশে যাচ্ছে, তাতে অনেক দেশের আস্থা হারিয়েছে। যারা বিদেশে লোক পাঠান, তাদেরও ভূমিকা আছে এ সংকটে।”
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চাইলে অন্যান্য দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কূটনৈতিকভাবে আলোচনা করে বিষয়টির সমাধান করতে পারে।

No comments