হিজরা সেজে ২৮ বছর ভারতে বাস, বাংলাদেশি আব্দুল কালাম গ্রেপ্তার
ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের ভোপালে দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে ‘ট্রান্সজেন্ডার নারী’ পরিচয়ে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিক আব্দুল কালামকে গ্রেপ্তার করেছে স্থানীয় পুলিশ। শনিবার গভীর রাতে ভোপাল পুলিশের এক অভিযানে তার প্রকৃত পরিচয় ফাঁস হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মাত্র ১০ বছর বয়সে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন আব্দুল কালাম। প্রাথমিকভাবে তিনি মুম্বাইয়ে প্রায় ২০ বছর ছিলেন। এরপর চলে আসেন ভোপালের বুধওয়ারা এলাকায় এবং ‘নেহা কিন্নর’ নামে ট্রান্সজেন্ডার নারী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন। স্থানীয় সমাজে সহজে মিশে যাওয়ার জন্যই তিনি এই ভুয়া পরিচয় গ্রহণ করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আব্দুল ভারতীয় নাগরিক হিসেবে জাল আধার কার্ড, ভোটার আইডি ও পাসপোর্ট তৈরি করেন। এসব নথি ব্যবহার করে একাধিকবার বাংলাদেশেও যাতায়াত করেছেন তিনি। তার আচরণ ছিল এতটাই স্বাভাবিক যে, এতদিনে তার প্রতি কারও সন্দেহ হয়নি।
ভোপাল পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তা শালিনী দীক্ষিত জানান, “গোপন তথ্যদাতার মাধ্যমে আমরা বিশ্বাসযোগ্য সূত্রে খবর পাই। এরপর যাচাই করে তাকে গ্রেপ্তার করি। সে দীর্ঘদিন ধরে ভোপালে বাস করছিল এবং এর আগে মহারাষ্ট্রেও ছিল। জাল পরিচয়পত্র দিয়ে সে নিয়মিত যাতায়াত করত।”
মামলাটি এখন কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর তত্ত্বাবধানে রয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের দিক বিবেচনায় গোয়েন্দা ব্যুরো (IB), সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড (ATS) ও সাইবার ক্রাইম ইউনিট বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছে।
পুলিশ সূত্র আরও জানিয়েছে, আব্দুলের মোবাইল ফোন, কল লগসহ বিভিন্ন ডিজিটাল ডেটা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এছাড়া, তার ট্রান্সজেন্ডার পরিচয় সত্য কিনা তা যাচাইয়ের জন্য লিঙ্গ পরীক্ষা করানোর প্রস্তুতিও নিচ্ছে পুলিশ।
বর্তমানে আব্দুল কালাম তালাইয়া থানায় ৩০ দিনের পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। উচ্চ নিরাপত্তার মধ্যে তাকে রাখা হয়েছে এবং কেবলমাত্র স্টেশন ইনচার্জ ও দুজন মনোনীত নারী পুলিশ কর্মকর্তার তার সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি রয়েছে। তার গ্রেপ্তারের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে অবহিত করা হয়েছে।
তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

No comments