শিরোনাম

বগুড়ায় বইয়ের পাতার সূত্র ধরে শিশু মেঘনাকে উদ্ধার করলো পুলিশ

 


বগুড়া প্রতিনিধিঃ

এক অসাধারণ মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করল বগুড়ার শাজাহানপুর থানা পুলিশ। বইয়ের পাতায় লেখা বিদ্যালয়ের শিক্ষকের মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে হারিয়ে যাওয়া সাত বছরের এক শিশু কন্যা মেঘনাকে তার পরিবারের কাছে নিরাপদে ফিরিয়ে দিল পুলিশ।

জানা গেছে, শনিবার (২১ জুন) সকালে ঢাকা থেকে রংপুরগামী এস কে স্পেশাল পরিবহনের একটি বাসে করে শিশু মেঘনা ও তার পিতা মোহাম্মদ মিরু (৩৫) সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্তে বাসটি কিছু সময়ের জন্য থামলে, মিরু মিয়া প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাস থেকে নেমে পড়েন। এ সময় মেঘনাকে বাসে রেখেই যান তিনি। কিছুক্ষণের মধ্যে বাসটি তাকে ফেলে রেখেই যাত্রা শুরু করে।

চলন্ত বাসে একা পড়ে যায় ছোট্ট মেঘনা। বিষয়টি বুঝতে পেরে বাসের সুপারভাইজার দ্রুত বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করেন এবং মেঘনাকে শাজাহানপুর থানায় নিয়ে গিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের হাতে তুলে দেন।

এরপর শুরু হয় পুলিশি অনুসন্ধান। দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিউটি অফিসার এসআই তহুরা বেগম শিশুটির সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে একটি বইয়ের পাতায় বিদ্যালয়ের শিক্ষকের মোবাইল নম্বর খুঁজে পান। সঙ্গে সঙ্গে উক্ত শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিবারের কাছে খবর পাঠানো হয়।

এদিকে, বাসে মেয়ে না পেয়ে পিতা মোহাম্মদ মিরু নানা জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন এবং চরম দুশ্চিন্তায় পড়েন। পরে পরিবারের মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি শাজাহানপুর থানায় উপস্থিত হন। সকল প্রক্রিয়া ও যাচাই-বাছাই শেষে পুলিশ মেঘনাকে নিরাপদে তার পিতার হাতে তুলে দেয়।

শাজাহানপুর থানার এই মানবিক উদ্যোগ সামাজিক মাধ্যমে প্রশংসার জোয়ারে ভাসছে। থানার ওসি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, "মানুষের পাশে থাকাই আমাদের দায়িত্ব, বিশেষ করে একজন শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটা আমাদের নৈতিক ও পেশাগত দায়িত্ব।"

ছোট্ট মেঘনা তার বাবার কোলে ফিরে গিয়ে চোখে জল নিয়ে বলে, “আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম, কিন্তু পুলিশ আম্মু আমাকে অনেক আদর করেছে।”

এ ঘটনা প্রমাণ করে, পুলিশ শুধু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নয়, বরং সংকটে মানুষের পরম ভরসার আশ্রয়ও।

No comments