শিরোনাম

কচু চাষে সফল নবীনগরের কৃষকরা



স্টাফ রিপোর্টারঃ

আগে বর্ষাকালে পানিতে ডুবে যাওয়া নিচু জমিগুলো ফেলে রাখা হতো। কিন্তু এখন সেই জমিতে কচু চাষ করে সফল হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের কৃষকরা। স্যাঁতস্যাঁতে জমিতে কচু চাষ করে তারা ভালো আয় করছেন।

২০২১ সাল থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে এই এলাকায় শুরু হয় বাণিজ্যিক কচু চাষ। প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের উন্নত জাতের কচুর চারা (যেমন: বারি পানি কচু-১ 'লতিরাজ', বারি পানি কচু-২), সার ও জৈবসার দেওয়া হয়। সঙ্গে ছিল প্রশিক্ষণ ও মাঠ দিবস আয়োজনের ব্যবস্থাও

এ বছর নবীনগরে প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে কচু চাষ হচ্ছে। প্রতি হেক্টর জমি থেকে ১৫ থেকে ২৫ টন কচুর লতি পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে প্রতি টন লতির দাম ৩০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, “এক বিঘা জমিতে কচু লাগিয়ে সপ্তাহে ১০ হাজার টাকার মতো লতি বিক্রি করছি।”

ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের সেলিনা বেগম জানান, “তিন মাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকার কচু বিক্রি করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকলে আরও ৫০ হাজার টাকার কচু বিক্রির আশা করছি।”

নারায়ণপুর গ্রামের সোহাগ খান, খোরশেদ মিয়া ও বিউটি আক্তার ‘নারিকেলি’ জাতের কচু চাষ করছেন। এই জাতের কচু কাঠ হিসেবে বিক্রি হয়। তারা প্রতি বিঘা জমি থেকে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করছেন।

এই মুহূর্তে নবীনগরে প্রায় ৩০০ বিঘা জমিতে কচু চাষ হচ্ছে। প্রতিবছরই চাষের পরিমাণ বাড়ছে। সাধারণ কৃষকরাও এখন কচু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন বলেন, “বর্ষাকালে নিচু জমিতে কচু চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। কৃষকরা এটিকে লাভজনক ফসল হিসেবে নিচ্ছেন। চার থেকে পাঁচ মাসের মধ্যেই কচুতে ভালো ফলন পাওয়া যায়।”

নবীনগরের কচু চাষ এখন শুধু নিজেদের খাওয়ার জন্য নয়, এটি হয়ে উঠেছে একটি সফল বাণিজ্যিক কৃষি মডেল। সঠিক পরামর্শ ও বাজার ব্যবস্থা থাকলে কৃষকরা কচু চাষ থেকে নিয়মিত আয় করতে পারবেন এবং অর্থনৈতিকভাবে আরও স্বাবলম্বী হবেন।

No comments