ফয়সাল হোসাইন সনি, বগুড়া
বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় মহিষাবান ইউনিয়নের কর্ণিপাড়া গ্রামে রাস্তার নির্মাণকাজকে কেন্দ্র করে স্বেচ্ছাসেবকদল নেতাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, হুমকি-ধামকি ও মারধরের চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আঙ্গুর বানু গাবতলী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়—অভিযোগকারী আঙ্গুর বানু (৪২) মহিষাবান ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য। তিনি জানান, স্থানীয় জনৈক রায়হানের বাড়ি সংলগ্ন ৭৬ মিটার রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের কাজ পান তিনি। কাজের দায়িত্বে থাকা তার স্বামী মোঃ সহিদুল ইসলাম লিটনের (৫৫) নিকট বিবাদী— গাবতলী উপজেলার মহিষাবানা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব উজ্জ্বল সরকার (৩২), একই এলাকার সিদ্দিক (৩০) ও দিলু (৩৫), এবং আরও ৫–৭ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি মিলে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ৭ নভেম্বর বিকেলে রাস্তার কাজে থাকা অবস্থায় বিবাদীরা তার স্বামীকে হুমকি দেয়, মারধরের চেষ্টা করে এবং ভয়ভীতি দেখায়। এসময় আঙ্গুর বানু ও তার কন্যা এবং স্বামীকে রক্ষা করতে গেলে তাদের প্রতিও বিবাদীরা মারমুখী আচরণ করে। অভিযোগ অনুযায়ী, প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়।
অভিযোগকারী আরও বলেন, ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়িয়ে তাদের মানহানি করা হচ্ছে। ফলে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
অভিযোগকারী আঙ্গুর বানু বলেন—“রাস্তার কাজে ব্যবহৃত ইটকে নকল ইট দাবি করে তারা আমার স্বামীর কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় আমার স্বামীকে মারধর পর্যন্ত করে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।”
অভিযুক্ত সিদ্দিক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন—“আমি প্রায় ৪ বছর ধরে শহরে থাকি। ফোন পেয়ে গ্রামের দিকে গিয়েছিলাম মাত্র। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।”
অন্য অভিযুক্ত মোঃ উজ্জ্বল সরকার, যিনি মহিষাবান ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব, তিনি বলেন—“রাস্তার কাজে অনিয়মের প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ করা হয়েছে। আমি পদধারী নেতা হওয়ায় আমার ও আমার সংগঠনের নাম খারাপ করার চেষ্টা চলছে।”
ঘটনাটি সম্পর্কে জানতে অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসআই এরশাদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঘটনাস্থলের প্রত্যক্ষ সাক্ষী হিসেবে বেশ কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি ঘটনার সত্যতা জানেন বলে দাবি করেছেন। বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনার পর থানায় অভিযোগ করতে বিলম্ব হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন অভিযোগকারী।
No comments