শিরোনাম

রাজনৈতিক মামলার আসামি হয়েও প্যানেল চেয়ারম্যান! প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জনসম্মুখে অবাধ বিচরণ

ফয়সাল হোসাইন সনি, বগুড়া

বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার ৩নং ভাটরা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. মাহাবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা থাকলেও তিনি প্রকাশ্যে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন—এমন অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের মধ্যে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামীপন্থী নেতা মাহাবুর রহমান গত বছরের ২ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে হাইকোর্ট থেকে ৬ সপ্তাহের অস্থায়ী জামিন নেন। কিন্তু জামিনের মেয়াদ শেষ হলেও তিনি নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ না করে অবাধে চলাফেরা করছেন এবং বর্তমানে ভাটরা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করছেন।

একই মামলায় দুই চাচাতো ভাইও আসামি, মামলার ইজাহার অনুযায়ী (নম্বর ৪৮, ৯২, ৯৩), মাহাবুর রহমান ছাড়াও তার দুই চাচাতো ভাই আলম ও রুহুল আমিনও একই মামলায় অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। তাদের জামিনের মেয়াদও শেষ হয়েছে ৮ মাসেরও বেশি সময় আগে, তবুও তারা অবাধে ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

প্রভাবশালী রাজনীতিকের ছত্রছায়ায়?এলাকাবাসীর দাবি, মাহাবুর রহমান স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের সহায়তায় প্রশাসনকে প্রভাবিত করে আইনের তোয়াক্কা করছেন না। তার বিরুদ্ধে থাকা মামলা ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে দায়ের হয়, কিন্তু তিনি তখন থেকেই চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি নজরে নিলেও, এ পর্যন্ত কোনো আইনি অগ্রগতি দেখা যায়নি।

একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কায়দায় সে এখনো এলাকার সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। একজন মামলার আসামি প্রকাশ্যে প্যানেল চেয়ারম্যানের আসনে বসে থাকে—এটা তো আইনের প্রতি একপ্রকার উপহাস!”

নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফইম উদ্দিন বলেন, “আমি থানায় সদ্য যোগদান করেছি, তাই মামলার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অবগত নই। তবে বিষয়টি আমলে নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে নন্দিগ্রাম উপজেলার ৩নং ভাটরা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মাহাবুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি এই প্রতিবেদকের মোবাইল ফোন কল রিসিভ করেননি।

এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আরিফুল ইসলাম জানান, “আমি একেবারেই নন্দিগ্রাম উপজেলায় নতুন নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেছি। একজন মামলার আসামী এবং আওয়ামী নেতা, কীভাবে তিনি প্যানেল চেয়ারম্যান হলেন তা আমার জানা নেই। তবে আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখবো এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিবো।”

এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন, “অবিলম্বে ওই আওয়ামীপন্থী প্যানেল চেয়ারম্যানসহ সকল আসামিকে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

No comments