অন্তরঙ্গ ভিডিও ফাঁসের ভয় দেখিয়ে তরুণীর ঘরে মাদ্রাসা শিক্ষক! স্থানীয়দের হাতে আটক, দেড় লাখ টাকায় রফাদফা
আব্দুর রাজ্জাক, জয়পুরহাটঃ
জয়পুরহাটের কালাইয়ে কবিরাজি চিকিৎসার আড়ালে এক তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ এবং পরবর্তীতে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ফাঁসের ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ উঠেছে এক মাদ্রাসা প্রভাষকের বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুরে ওই তরুণীর ঘরে প্রবেশ করলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। পরে দেড় লাখ টাকায় আপোষ মীমাংসা করা হয় বলে জানা গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নের এলতা গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ক্ষেতলাল উপজেলার বটতলী মাদ্রাসার আরবি বিভাগের প্রভাষক মাওলানা এমরান হোসেন চাকরির পাশাপাশি কালাই উপজেলার এলতা পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করতেন। পাশাপাশি তিনি কবিরাজি চিকিৎসাও করতেন। মেয়েলি সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ওই তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং বিয়ের আশ্বাসে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন এমরান হোসেন।
তরুণীর অভিযোগ, এসব সম্পর্কের সময় এমরান হোসেন তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে রাখেন। সম্প্রতি তরুণী বিয়ের দাবি করলে এমরান ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে ভিডিও ফাঁসের ভয় দেখিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকেন।
শুক্রবার বিকেলে মোলামগাড়ীহাট এলাকায় তরুণীর সঙ্গে দেখা হলে এমরান প্রকাশ্যে সিএনজিতে তোলার চেষ্টা করেন। জনতার বাধায় ব্যর্থ হয়ে তিনি সরে যান। রাতে আবার ফোনে তরুণীকে হুমকি দেন, “কথা না শুনলে ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়া হবে।”
শনিবার দুপুরে যোহরের নামাজ শেষে এমরান হোসেন তরুণীর ঘরে ঢুকে অবস্থান নেন। পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে আটক করেন। পরে গ্রাম্য মধ্যস্থতায় দেড় লাখ টাকায় বিষয়টি রফাদফা করা হয়।
তরুণীর মামা রুবেল হোসেন বলেন, “আমরা মামলা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু গ্রামের সবাই মিলে দেড় লাখ টাকা দিয়ে আপোষ করে দিয়েছে। টাকা নগদ দেওয়া হয়েছে।”
অভিযুক্ত প্রভাষক এমরান হোসেন বলেন, “আমি তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম এটা সত্য, তবে কোনো খারাপ কাজ করিনি।”
স্থানীয় বিএনপি নেতা মুকুল হোসেন বলেন, “ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলাম। গ্রামের সবাই মিলে সমাধান করেছে।”
কালাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন, “ঘটনার খবর পেয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই পারিবারিকভাবে মীমাংসা হয়ে গেছে। কেউ লিখিত অভিযোগ না করায় মামলা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

No comments