সার আমদানিতে দুর্নীতির অভিযোগ ভিত্তিহীন: কৃষি মন্ত্রণালয়
চ্যানেল টেন অনলাইনঃ
সার আমদানিতে কোনো অনিয়ম হয়নি—বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় এসব অভিযোগকে 'ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার' বলে উল্লেখ করে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বিবৃতিতে জানানো হয়, রাষ্ট্রীয় (জি-টু-জি) ও বেসরকারি পর্যায়ের মাধ্যমে নন-ইউরিয়া সার আমদানির কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ২০১৫ সালের পরিপত্র অনুযায়ী, সর্বনিম্ন দরদাতাকে ক্রয়াদেশ প্রদান করে সার আমদানি করা হয়। দর যাচাইয়ের ক্ষেত্রে বিএডিসি’র মূল্য তালিকা এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বুলেটিন—আরগুস এফএমবি ও ফার্টিকন—ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
কৃষি মন্ত্রণালয় জানায়, অতীতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সর্বনিম্ন দরদাতাদের কাছ থেকেও উচ্চমূল্যে সার কিনতে হতো, যার ফলে সরকার বড় অঙ্কের ক্ষতির সম্মুখীন হতো। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার শুধুমাত্র সর্বনিম্ন দরদাতার কাছ থেকে সার আমদানির নীতি গ্রহণ করেছে, ফলে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় এবং অতিরিক্ত মুনাফার সুযোগ বন্ধ হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সার আমদানিতে কোনো একক দেশ থেকে পুরো চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়, তাই দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে। ভৌগোলিক দূরত্ব ও পরিবহন খরচের তারতম্যের কারণে সিএফআর মূল্য ভিন্ন হয়ে থাকে—যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম ধাপে ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ হাজার টন টিএসপি, ২ লাখ ৫৫ হাজার টন ডিএপি এবং ৯০ হাজার টন এমওপি সরবরাহের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আরও ৬টি প্রতিষ্ঠানকে একই দরে ৯০ হাজার টন টিএসপি ও ১ লাখ ২০ হাজার টন ডিএপি সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে, নির্দিষ্ট সারের ক্ষেত্রে সব আমদানিকারককে একই দরে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে—কারো প্রতি পক্ষপাত বা বৈষম্য করা হয়নি।
বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, সরকারের স্বচ্ছ ও কঠোর নীতির ফলে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অতিরিক্ত দামে সার আমদানির সুযোগ বন্ধ হওয়ায় একটি স্বার্থান্বেষী মহল এখন অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ না করে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করাকে দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করা হয়েছে।
বিবৃতির শেষে কৃষি মন্ত্রণালয় অনুরোধ জানায়, খাদ্য নিরাপত্তার মতো সংবেদনশীল বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের আগে তথ্যের যথাযথ যাচাই নিশ্চিত করার জন্য। তারা উল্লেখ করে, গত এক বছরে শাকসবজি, ধান, আলু, পেঁয়াজ, আমসহ নানা ফসলে বাম্পার ফলন হয়েছে—যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।
মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, সরকার দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে কাজ করে যাচ্ছে এবং কৃষি খাতকে সিন্ডিকেট ও দুর্নীতিমুক্ত রাখতে তারা বদ্ধপরিকর। গঠনমূলক সমালোচনাকে সরকার সবসময় স্বাগত জানায়।

No comments