শিরোনাম

বগুড়ার আবাসিক হোটেলগুলোতে চলছে দেহ ব্যবসা, নীরব প্রশাসন

 


আঃ মমিন, প্রতিবেদকঃ

বগুড়ার বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে দেদারছে চলছে অবৈধ দেহ ব্যবসা। শহরের কেন্দ্রস্থল তিনমাথা, সাতমাথা ও মাটিডালি এলাকার একাধিক হোটেলে প্রতিদিনই এই অনৈতিক কার্যকলাপ সংঘটিত হচ্ছে। অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে।


বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, তিনমাথার হোটেল অবকাশ, সাতমাথার হোটেল টুইন ব্রাদার্স ও আমির গেস্ট হাউজ, এবং মাটিডালির হোটেল ড্রিম প্যালেস, সান, সাইন, গোধূলি ও গ্যালাক্সিন—এইসব হোটেলগুলোতে দিনের বেলায় ‘পরিবারিক পরিবেশ’ দেখানো হলেও ভিতরে গোপনে চলছে দেহ ব্যবসা। নিয়মিতভাবে বিভিন্ন বয়সী নারীকে এনে এসব হোটেলের কক্ষে গ্রাহকদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।

ভুক্তভোগী এক নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “আমাকে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে এখানে আনা হয়েছিল। পরে বাধ্য করা হয় এই পেশায় নামতে।” অনেক নারীই হতদরিদ্র পরিবার থেকে আসা কিংবা প্রতারণার শিকার হয়ে এই পথে বাধ্য হয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনের পর দিন এই অবৈধ কর্মকাণ্ড চললেও পুলিশ বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোনো অভিযান বা পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। তিনমাথা এলাকার এক ব্যবসায়ী বলেন, “প্রতিদিন সন্ধ্যার পর এসব হোটেল এলাকায় সন্দেহজনক চলাফেরা দেখা যায়। অনেকবার অভিযোগ করলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি।”

তারা দাবি করেন, হোটেল মালিকদের সঙ্গে একটি দালালচক্র এবং পুলিশের কিছু অসাধু সদস্যের যোগসাজশে এই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দিনের আলোতে চলছে।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, এই ধরনের কার্যকলাপ শুধু সমাজে নৈতিক অবক্ষয় ডেকে আনছে না, বরং এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে মাদক, নারী পাচার ও চাঁদাবাজির মতো ভয়াবহ অপরাধ। তারা নিয়মিত অভিযান এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান বাসির বলেন, “আমরা এমন অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট হোটেলগুলোতে অভিযান চালাই। এর আগেও অভিযান চালানো হয়েছে। আবারও অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই ধরনের সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে শুধু প্রশাসনিক নয়, নাগরিক সচেতনতা এবং মিডিয়ারও ভূমিকা থাকা উচিত। দোষীদের আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি, যারা প্রতারিত হয়ে এই পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করাও জরুরি।

No comments